রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
রোহিঙ্গাদের হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যে শুনানি হবে, সেটি যেন নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের পরিবর্তে অন্য কোনো দেশে, বিশেষ করে বাংলাদেশে আদালত বসিয়ে করা হয়, সেরকম একটি আবেদন পেশ করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সব কার্যক্রম সাধারণত চলে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে। কিন্তু এই প্রথম এরকম কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলো যেখানে নির্যাতিতদের শুনানির জন্য আদালতকেই অন্য কোনো দেশে বসানোর আবেদন জানানো হয়েছে।
গত মাসে এই আবেদন করেন রোহিঙ্গাদের পক্ষে কাজ করছে এমন তিনটি ‘ভিকটিম সাপোর্ট গ্রুপে’র আইনজীবীরা। তারা এমন একটি দেশে এই শুনানির অনুরোধ জানিয়েছেন, যেটি নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের কাছাকাছি কোনো দেশে হবে।
আবেদনে দেশের কথা উল্লেখ না থাকলেও, আইসিসি এই আবেদনের অগ্রগতির যে বিবরণী প্রকাশ করেছে, তাতে এই দেশটি ‘সম্ভবত বাংলাদেশ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্প্রতি মিয়ানমারের দুজন সেনাসদস্য রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হত্যা এবং ধর্ষণের ঘটনায় সরাসরি অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তারা দ্য হেগে গিয়ে পৌঁছেছেন বলেও জানা গেছে।
মিয়ানমারকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য যে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন সেখানে এই দুটি ঘটনাকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবীরা।দালত সরানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসির রেজিস্ট্রি বিভাগকে আদেশ দেওয়া হয়েছে, দ্য হেগ থেকে অন্য কোনো দেশে আদালতের কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে। আগামী ২১শে সেপ্টেম্বরের আগেই এই সম্ভাব্যতা যাচাই করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
কেন আদালত অন্য দেশে বসানোর উদ্যোগ?
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবি আহমেদ জিয়াউদ্দীন বিবিসি বাংলাকে বলেন, অন্য দেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের শুনানির জন্য আদালত বসানোর উদ্যোগ খুবই বিরল এক ঘটনা। যেহেতু নির্যাতনের শিকার হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশেই আছেন, তাই এটি বাংলাদেশে হলে শুনানিতে তাদের সাক্ষ্য-প্রমাণ দেওয়া সহজ হবে।
আবেদনকারি আইনজীবীরাও এরকম যুক্তিই দিয়েছেন।
শ্যানন রাজ সিং নামে একজন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবি এ নিয়ে একটি ব্লগে লিখেছেন, ‘পাখির মত উড়ে গেলে, বৃষ্টিস্নাত দ্য হেগ থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব আনুমানিক ৮,০০০ কিলোমিটার। সেখানকার শরণার্থী শিবিরে নির্যাতনের শিকার যে রোহিঙ্গারা থাকেন, তাদের জন্য এই দূরত্ব একেবারেই অনতিক্রম্য।’
এই ব্লগে তিনি আরও বলেছেন যে, আইসিসির রুল অনুযায়ী, স্বাগতিক দেশের (নেদারল্যান্ডস) বাইরে অন্য কোনো দেশেও এই আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ আছে। রোম স্ট্যাটিউটের একটি ধারা উল্লেখ করে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক আদালত প্রয়োজন অনুযায়ী কোন মামলার পুরো বা আংশিক শুনানির জন্য অন্য কোন স্থানেও বসতে পারে। সূত্র:আমাদের সময়।
ভয়েস/জেইউ।